অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে (ডিপিডিসি) চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সেবাদানরত সাতজনের নিয়োজন বাতিল করে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৪) ডিপিডিসির এমপ্লয়ী রিলেশনস এন্ড ডিসিপ্লিন বিভাগের ইস্যু করা এক পত্র (স্মারক নম্বর: ২৭.৮৭.০০০০.৪০৫.২৭.০২৩.২০.৬৩২) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তাঁরা হলেন- মেসার্স মুন পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের মো. ইউসুফ আলী ও আব্বাস আলী, ইউনিভার্সাল ট্রেড অ্যান্ড রশিদ ভাই কো জেভি-র মো. আব্দুল হাদী ও মো. আল মামুন, এনজেইন বৈদ্যুতিক বাণিজ্যিক সংস্থার মো. আরিফ খান ও মো. নজরুল ইসলাম এবং এসএমকে-এইচএইচটি অ্যান্ড তামিম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েটসের মো. সেলিম রেজা মিশু।
পত্রে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির দাখিলকৃত প্রতিবদনে ডিপিডিসিতে সেবাদানরত একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিম্নবর্ণিত এমপ্লয়িগণ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকের প্রকৃত বিদ্যুৎ ব্যবহার অনুযায়ী মিটারের প্রকৃত রিডিং সংগ্রহ না করা, অস্পষ্ট স্ন্যাপশট গ্রহণ করা, জমাকৃত ইউনিটসহ মিটার গায়েব করে ডিপিডিসির রাজস্ব ক্ষতি করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরো বলা হয়, এমতাবস্থায়, ডিপিডিসি থেকে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের নিয়োজন বাতিল করতঃ তাদের বর্তমান (যদি থাকে) কর্মরত দপ্তরসহ ভবিষ্যতে ডিপিডিসি'র অন্য কোনো দপ্তরে/স্থাপনায় অন্য কোনো সেবাদানকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কোনভাবেই (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে) যেন সম্পৃক্ত করা না হয় সে বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, এই পত্র জারির পর বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎকর্মী ও কাকরাইল ডিভিশনের প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন, এদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রাহকের বিদ্যুৎচুরির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। সম্প্রতি গ্রাহকের যোগসাজশে বিদ্যুৎচুরির ঘটনায় বাংলা স্কুপ একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনগুলোতে প্রতিবেদক যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণাদিসহ একটি চক্র ও এক প্রভাবশালী নির্বাহী পরিচালকের সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করেছিল। এরপরও মূল অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী ওই নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে কোন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অন্যদিকে, কাকরাইল ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে গত ৬ অক্টোবর গ্রাহক মো. মুসা-মজিদ গং-এর বিদ্যুৎচুরির ঘটনায় বিদ্যুৎ বিল ও জরিমানার (পেনাল্টি) বিল মাত্র ১৩,৩৪,৮০৭.৫৯ টাকা ধার্য্য করে ডিপিডিসির প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ২০১৫ সাল থেকে ওই গ্রাহক দুটি মিটারে বিদ্যুৎচুরি করে আসছিল। চুরি ধরার পর গ্রাহকের আঙ্গিনায় ডিপিডিসির চেক মিটারে শীতকালে (গ্রাহককে সরবরাহ করা দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল) যে রিডিং উঠেছে সেই হিসাবে গ্রাহকের পেনাল্টি বিল হওয়ার কথা অর্ধকোটি টাকার উপরে। প্রকৃত পেনাল্টি বিল জারি না হওয়ায় ডিপিডিসির অনেক বড় রাজস্ব ক্ষতি হয়ে বলে একাধিক প্রকৌশলী নিশ্চিত করেছেন।
বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়েই অন্যত্র বদলি
ডিপিডিসিতে ছয় প্রকৌশলীকে রদবদল
কাকরাইলে বিদ্যুৎচুরি: গ্রাহককে গুণতে হতে পারে অর্ধকোটি টাকা
বিদ্যুৎচুরির হোতাদের কি কিছুই হবে না?
গ্রাহকের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিদ্যুৎচুরি!